ভৌত অবকাঠামো, মনিটরিং ও সুপারভিশন, এমআইএস ও ই-হেলথ

কার্যাবলী

  • নির্মাণ : কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ লক্ষমাত্রা ১৩৮৬১ টি। তন্মধ্যে ১০৬২৪ টি এইচপিএসপি এবং আরসিএইচসিআইবি এর আওতায় ২৭৫২ টি সহ মোট নির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা দাড়ায় ১৩৩৭৬ টি। অবশিষ্ট ৪৮৫ টির মধ্যে ৩০০ টি জাইকা এবং ৩৬ টি পিপিডি এর অর্থায়নে নির্মিত হবে। ১৪৯ টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের নির্দিষ্ট কোন আর্থিক সহায়তা সুনির্দিষ্ট হয়নি। কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মান পিএফডি ওপির আওতায় বাস্তবায়িত হবে এবং প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান পিএফডি ওপিতে থাকবে।

  • বিদ্যমান লক্ষমাত্রা বহির্ভুত কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ : সেবার ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিতকরণে ইউনিয়নস্থ পুরানো ওয়ার্ডে যেখানে কোন স্বাস্থ্য স্থাপনা নাই সেখানে ১ টি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকা উচিৎ। বিদ্যমান লক্ষ্যমাত্রা (১৩৮৬১) টি প্রতিষ্ঠার পর ও ১০২৯ টি পুরানো ওয়ার্ড শূন্য থাকবে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে (অত্যন্ত দূর্গম, বিছিন্ন এবং দারিদ্য পীড়িত এলাকা) কমপক্ষে ৫০০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক লক্ষ্যমাত্রায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারে। আর তা হলে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি পিএফডি ওপির আওতায় নির্মিত হবে এবং পিএফডি ওপিতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখতে হবে।
  • সীমানা প্রাচীর : কমিউনিটি ক্লিনিকের নিরাপত্তা ও জমি রক্ষার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মান আবশ্যক। এইচডি পূর্বের মত এটি বাস্তবায়ন করবে।
  • প্রসব কক্ষ : মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যু ও জটিলতা কমানোর মাধ্যমে মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নে প্রতিটি ইউনিয়নের ১ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ইতিমধ্যে গ্যাভি এইচএস এর অর্থায়নে ১৬২ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রসব কক্ষ নির্মান করা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০০০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে এইচইডি এর মাধ্যমে প্রসব কক্ষ নির্মান আবশ্যক। পিএফডি ওপিতে প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান রাখতে হবে।
  • কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন : দেশব্যাপী পরিচালিত বিশাল কর্মকান্ড (কমিউনিটি ক্লিনিক) এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এবং কর্মকর্তা, কর্মচারীদের স্থান, গুদাম, প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের স্থান সংকুলানের লক্ষ্যে প্রধান কার্যালয় হিসাবে একটি পৃথক ভবন স্থাপন আবশ্যক।
  • উল্লেখ্য যে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক মহাখালীস্থ আইপিএইচ চত্বরে ১ টি জায়গা নির্বাচন করা হয়। এ বিষয়ে সাইট ম্যাপসহ প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সহ মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সুপারিশের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নির্মাণের জন্য ১ (দুই) একর জমি বরাদ্দ করে।

  • আরসিএইচসিআইবি এর আওতায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি এইচইডি নির্মাণ করে। যেহেতু মাঠ পর্যায়ে তাদের লোকবলের স্বল্পতা রয়েছে তাই নির্মাণের গুনগত মান নিশ্চিতকরণে নিয়মিত সুপারভিশন ও মনিটরিং ঘাটতি থাকে। তাই এলজিইডি, পিডব্লিউডি কে ও কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যেতে পারে।
  • মেরামত : ১৯৯৮-২০০১ এ নির্মিত বেশীরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকের বড় ধরনের মেরামত আবশ্যক। এছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে (নদীগর্ভে বিলীন, অত্যন্ত নাজুক অবকাঠামোগত অবস্থা যেগুলি আদৌ মেরামত যোগ্য নয়) পুন: নির্মান আবশ্যক (সম্ভব হলে একই জায়গায় অথবা নুতন জায়গায়)
  • পানি ও পয়: নিস্কাশন : বেশীরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকের পানি ও পয়:নিস্কাশনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তাই পুনরায় নলকুপ স্থাপন ও ল্যাট্রিন এবং পয়:নিস্কাশনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা আবশ্যক।
  • এইচইডি কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলার সকল স্বাস্থ্য অবকাঠামো মেরামত করবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ মানসম্মতভাবে সম্পন্ন করার জন্য কমিউনিটি গ্রুপকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
  • বৈদুতিক সংযোগ : যে সেকল কমিউনিটি ক্লিনিক এর সন্নিকটে বৈদ্যুতিক লাইন আছে সে সব ক্লিনিকে আভ্যন্তরীন বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন এবং সংযোগ প্রদান করতে হবে।
  • সোলার প্যানেল : যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত বা নিকটস্থ কোন বৈদ্যুতিক লাইন নাই বা অদূর ভবিষ্যতে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের সম্ভাবনা কম-সে সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে।

কার্যাবলী : সুপারভিশন ও মনিটরিং

  • সুপারভিশন ও মনিটরিং প্লান:সিবিএইচসি এর আওতায় পরিকল্পনা অনুসারে সুপারভিশন, মনিটরিং ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
  • বিদ্যমান পদ্ধতি জোরদারকরণ : সংশ্লিষ্ট নিবেদিত কর্মকর্তা ও তত্ত্বাবধায়ক ও প্রতিষ্ঠান সমূহের অংশগ্রহন জোরদার করতে হবে। এ মর্মে মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অদিদপ্তর, ও মহাপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর নির্দেশনা রয়েছে, যাতে জাতীয় পর্যায় হতে ইউনিয়ন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়কগণ সুনির্দিষ্ট চেকলিষ্ট ব্যবহার পূর্বক কতটি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করবেন তা উল্লেখ করা হয়েছে।
  • প্রথম সারির তত্ববধায়কগণের ভ‚মিকা : স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রথম সারির তত্ত্বাবধায়কগণের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ (প্রশিক্ষক সহায়িকা ও প্রশিক্ষক নির্দেশিকা চুড়ান্তকরণ, পরিকল্পনা) গ্রহন করা হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পর তত্ত¡বধানের সংখ্যা ও গুনগত মান বৃদ্ধি পাবে।
  • চেকলিষ্ট হালনাগাদকরন : বিদ্যমান চেকলিষ্টে, ব্যবস্থাপনা, ভৌত অবকাঠামো, সরবরাহ এবং অন্যান্য সাধারন বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত আছে। এটি বেশ কিছুদিন আগে প্রনয়ন করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহগনে এটিকে হালনাগাদ করতে হবে।
  • কেন্দ্রীয় মনিটরিং ইউনিট : এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সাথে সমন্বয় রেখে অন লাইন রিপোর্ট এর প্রতি সার্বক্ষনিক নজর রেখে, বিশ্লেষন ও প্রতিবার্তা প্রেরণের উদ্দেশ্যে সিবিএইচসি এর প্রধান কার্যালয়ে আইটি বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ইউনিট স্থাপন আবশ্যক।
  • প্রয়োগিক তত্ত্বাবধান: সেবার গুনগত মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় তত্ত্বাবধান ও মেনটরিং (সংশোধনের প্রয়োজনীয় পরামর্শ) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্বল্প পরিসরে সিবিএইচসি এর একটি সহযোগী সংগঠন প্রনীত এতদসংক্রান্ত একটি প্রয়োগিক চেকলিষ্ট এর মাধ্যমে প্রায়োগিক তত্ত্বাবধান ও মেনটরিং করেছে। এটি পর্যায়ক্রমে সারাদেশে সম্প্রসারণ করা হবে। ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় সংশ্লিষ্ট সরকারী, বেসরকারী বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের অংশগ্রহনে একটি প্রায়োগিক তত্ত্বাবধান চেকলিষ্ট চুড়ান্ত করা হয়েছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা ব্যবস্থাপকদের এটির উপর ওরিয়েনটেশন দেওয়া হয়েছে এবং ব্যবহার শুরু হয়েছে।
  • ইউনিয়ন মেডিকেল অফিসার : ইউনিয়নে পদায়নকৃত মেডিকেল অফিসারগন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক এর সুপারভিশন ও মনিটরিং বিষয়ক দায়িত্ব পালন করবেন।
  • মোবাইল ট্রাকিং : বিভিন্ন পর্যায়-জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা হতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেবা প্রদানকারীদের অবস্থান অনুসরণ করতে হবে।
  • স্কাইপির মাধ্যমে মনিটরিং : এটি স্বল্প পরিসরে মৌলভীবাজার জেলায় শুরু করা হয়েছে। এটি খুবই কার্যকরী এবং সারাদেশে পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারণ করতে হবে। এ বিষয়ে এম.আই.এস. স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কারিগরী সহায়তা গ্রহন করতে হবে।
  • উপকারভোগীদের অনুসরণ : সিএইচসিপিগন গর্ভবতী মায়েদের এএনসি, প্রসব পরিকল্পনা, প্রসব পরবর্তী সেবা এবং যারা শিশুদের যত্ন নেন, তাদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে মনে করিয়ে দিতে পারেন-বিশেষত: যারা বাদ পেেড়ছেন অথবা পরবর্তী সেবা গ্রহন করছেন না তাদেরকে আহবান ও সেবা প্রদান করতে পারেন। সিএইচসিপিদের মোবাইল ফোন বিল পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা করা যেতে পারে অথবা কমিউনিটি গ্রুপের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্থানীয় তহবিল হতে এ ব্যয় নির্বাহ করা যেতে পারে।
  • বিভাগীয় পর্যালোচনা সভা : চলমান কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা, অভিজ্ঞতা বিনিময়, শক্তিশালী ও দূর্বল দিকসমূহ, চিহ্নিতকরন ও পরবর্তী করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে সকলের অংশগ্রহনে বিভাগীয় পর্যায়ে পর্যালোচনা সভার আয়োজন করতে হবে। এটি ৬ মাস অন্তর অথবা বছরে ১ বার অনুষ্ঠিত হবে।
  • কার্যাবলী : ই হেলথ ও এমআইএস :
  • শক্তিশালী এমআইএস : সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ডিএইচআইএস এর মাধ্যমে অন লাইন রিপোর্ট প্রদান করছে। এটিকে এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সহযোগীতায় আর ও শক্তিশালী করতে হবে।ই-হেলথ প্রতিষ্ঠা : সেবার গুনগত মানোন্নয়নে বিশেষত: কমিউনিটি ক্লিনিক হতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত ই-হেলথ সেবা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই সেবা কার্যকরী করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে পূর্বাহ্নেই অবহিত করতে হবে। এটি এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
  • স্থানীয় মনিটরিং : কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা কমিটি, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মনিটরিং করতে পারেন। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে প্রাপ্ত ফলাফল বা সার্বিক অবস্থা বিষয়েঅবহিত করতে হবে।
  • উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মনিটরিং : কার্যাবলী, সরবরাহ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্বলিত সুনির্দিষ্ট চেকলিষ্ট ব্যবহার পূর্বক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিয়মিত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সমূহ মনিটরিং করবেন।
  • কার্যকরী সমন্বয় প্রতিষ্ঠা : মাঠ/গৃহ পর্যায়ে এবং প্রতিষ্ঠান হতে প্রদত্ত স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবা সমূহের মধ্যে একটি সুসমন্বয় পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে যাতে সেবা প্রদান ও রিপোর্ট এর মধ্যে কোন সমন্বয়হীনতা বা অতিরিক্ত/ঘাটতি না থাকে।
  • গবেষনা/মূল্যায়ন/সার্ভে : এমডিজি এর ন্যায় এসডিজি এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংগীকারবদ্ধতা বিবেচনায় এনে দলিলাদি প্রনয়ন করতে হবে।
সর্বশেষ আপডেট: 2019-05-14 09:35:48